যৌনহয়রানি

This page was last updated on: 2025-02-04

যৌনহয়রানি

শ্রম আইন অনুযায়ী, এর মানে হল, যখন কোন প্রতিষ্ঠানে কোন মহিলা কর্মী কে তার পদমর্যাদা বা অবস্থান নির্বিশেষে, একই প্রতিষ্ঠানে কোন ব্যক্তি এমন কোন ব্যবহার করতে পারবে না যা অশোভনীয় বা সেই মহিলা শ্রমিকের শালীনতা কে হানি করে। শ্রম আইন ২০০৬ এর অধীনে যৌন হয়রানি রোধ করার জন্য এছাড়া আর কোন বিধান নেই। ২০০৯ সালে মে মাসে পূর্ববর্তী ২০০৮ সালের পিটিশন নং ৫৯১৬ এর শুনানিতে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট যৌন হয়রানি বিষয়ক বিস্তারিত বর্ণনা প্রদান করে এবং নিয়োগকর্তাদের এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গুলোতে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে জরুরি পদক্ষেপ নিতে বলা হয়। যৌন হয়রানি বিষয়ক এই নির্দেশিকা সকল সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে ব্যবহার করা আবশ্যক (অনুচ্ছেদ ১) এবং যৌন হয়নারি বিষয়ক শুরু থেকে শেষ অবধি এবং প্রতিকূল পরিবেশে শ্রমিককে ধারনা প্রদান করতে হবে (অনুচ্ছেদ ৪)। এই নির্দেশিকা যৌন হয়রানি অপরাধের প্রতিরোধ সংক্রান্ত পদক্ষেপসহ সচেনতা বৃদ্ধি এবং ব্যাপকভাবে নারী পুরুষের সমান অধিকার এবং যৌন অপরাধ সম্পর্কে আইনি বিধানমালা প্রচার করার কাজ চিহ্নিত করে থাকে (৩,৫ ও ৬ নং অনুচ্ছেদ)। এছাড়াও এই নির্দেশিকার মধ্যে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা (অনুচ্ছেদ ৭ ও ১১), অভিযোগ প্রক্রিয়া সহ কর্মস্থলে একটি অভিযোগ কমিটির প্রতিষ্ঠা (অনুচ্ছেদ ৮-১০)এবং ফৌজদারি মামলা (অনুচ্ছেদ ১১) সমূহের বিবরণিও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। কর্মস্থানে পর্যাপ্ত কার্যকর ভাবে এই আইন স্থাপ্তিত না সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশিকা জারি করার ক্ষমতা আছে।

নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ প্রতিরোধের অধীনে, “যেকোনো ব্যক্তি যদি তার যৌন চাহিদা পূরণ করার জন্য বে-আইনি ভাবে কোন মহিলা শারীরিক ভাবে নির্যাতন করে অথবা এমন কোন অশ্লীল ভঙ্গি করে তবে তাকে যৌন নিপীড়ন অপরাধ হিসেবে গন্য করা হবে এবং সেই ব্যক্তিকে বিবরনসহ কারাদণ্ড (দুই থেকে সাত বছর) এবং জরিমানা দণ্ড দেওয়া হবে”।

বাংলাদেশের ২০১৫-র শ্রম আইনে ২০২২ সংশোধনীর অধীনে, যৌন হয়রানিকে নিম্নরূপ সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে:

  • অবাঞ্ছিত যৌন আচরণ, যেমন শারীরিক স্পর্শ বা অন্যান্য অনুরূপ কার্যকলাপ;
  • প্রাতিষ্ঠানিক এবং পেশাগত ক্ষমতা ব্যবহার করে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা করা;
  • যৌন হয়রানি বা অপমানজনক ভাষা;
  • যৌন সুবিধার জন্য দাবি বা অনুরোধ;
  • পর্নোগ্রাফি দেখানো;
  • যৌন মন্তব্য বা অঙ্গভঙ্গি;
  • অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি, গালিগালাজ করা, পেছনে ধাওয়া করা এবং যৌন উত্তেজনা মূলক ঠাট্টা করা সবই নিষিদ্ধ;
  • চিঠি, ফোন কল, সেল ফোন কল, এসএমএস, ই-মেইল, সোশ্যাল মিডিয়া, ছবি, নোটিশ, কার্টুন, চেয়ার-টেবিল, বেঞ্চ, নোটিশ বোর্ড, অফিস, কারখানা, শ্রেণীকক্ষ এবং ওয়াশরুমের দেয়ালে যৌন বিষয়ক লেখার মতো অপমান। ;
  • ব্ল্যাকমেইল বা কুৎসা রটানো করার উদ্দেশ্যে স্থির বা চলমান ছবি (ভিডিও) ক্যাপচার করা;

আইন ৩৬১ ক (২) বিধিবদ্ধ করে যে প্রতিটি কর্মক্ষেত্রে একটি পাঁচ (৫) সদস্যের যৌন হয়রানি প্রতিরোধ অভিযোগ কমিটি গঠন করা উচিত, যার নেতৃত্বে থাকবেন একজন নারী, সংগঠনে নারী প্রতিনিধির সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকবে৷

যৌন হয়রানি প্রতিরোধের নির্দেশিকা নিয়োগকর্তা দ্বারা বিকাশ করা উচিত এবং শ্রমিকদের মধ্যে বিতরণ করা উচিত। এই ধরনের অভিযোগ গ্রহনের জন্য প্রতিটি কর্মক্ষেত্রে একটি অভিযোগ বাক্স থাকা আবশ্যক।

এছাড়া, ২০২২-এর সংশোধিত নিয়মগুলি নির্দিষ্ট করে যে কোনও হয়রানি-সম্পর্কিত বিষয়গুলি নিয়ন্ত্রণ বা বিবেচনা করার জন্য একটি পাঁচ সদস্যের অ্যান্টি-হ্যারাসমেন্ট বা হয়রানি বিরোধী কমিটি (বা অভিযোগ কমিটি) গঠন করতে হবে। অভিযোগ কমিটিতে ৫ জন সদস্য থাকতে হবে, তাদের বেশিরভাগই নারী হতে হবে, একজন মহিলা প্রধান হিসাবে কাজ করছেন এবং সেই সংস্থা থেকে অন্যান্য প্রতিনিধিদের নির্বাচিত করা হবে।

ইপিজেড শ্রম আইনের অধীনে, যেখানে একজন মহিলা শ্রমিককে কোন কাজে নিযুক্ত করা হয়, সেখানে সংস্থার কোন ব্যক্তি তার সাথে এমন আচরণ করবেন না যা অশালীন বা অশালীন বলে মনে হতে পারে বা যা সেই মহিলার শালীনতা বা সম্মানের পরিপন্থী।

সূত্র: SRO নং ২৮৪- আইন/২০২২, “বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০১৫ এর সংশোধনী” নিয়ম ৩৬১; বাংলাদেশ ইপিজেড শ্রম আইন, ২০১৯ এর ১৮৯।

Loading...