ন্যায্যকাজেরব্যবস্থা

This page was last updated on: 2025-02-04

সমানমজুরি

সংবিধান অনুযায়ী, একটি দেশে সরকারকে সকল নাগরিকের জন্য সমান সুযোগের ব্যবস্থা করতে হবে। মানুষ এবং নাগরিকের মধ্যে সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্য দূরীভূত করার জন্য এবং সম্পদের সুষম বণ্টনের জন্য এবং রাষ্ট্রের সর্বত্র অর্থনৈতিক উন্নয়নের অভিন্ন ধারা বজায় রাখার উদ্দেশ্যে সকলকে সুযোগ করে দেওয়ার জন্য রাষ্ট্রকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।

যেকোনো শ্রমিকের ক্ষেত্রে ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণের সময় অবশ্যই একই ধরনের কাজের প্রেক্ষিতে নারী, পুরুষ এবং শারীরিক প্রতিবন্ধী শ্রমিকদের জন্য একটি আদর্শ মজুরি দিতে হবে এবং লিঙ্গ বা প্রতিবন্ধকতার ভিত্তিতে এই ক্ষেত্রে কোনও বৈষম্য করা উচিত নয়।

অনুরূপ বিধানবলী EPZ শ্রম আইন ২০১৯ এ পাওয়া যায়।

উৎস: গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংবিধানের ১০,১৯,২০; শ্রম আইন ২০০৬ এর ধারা ৩৪৫; বাংলাদেশের EPZ শ্রম আইন, ২০১৯-এর §১৯৭।

বৈষম্যহীনতা

সংবিধান অনুযায়ী, প্রত্যেকটি নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান এবং আইনের অধীনে সমান আশ্রয় লাভের অধিকারি। ধর্ম, বর্ণ, জাতি, লিঙ্গ বা জন্মস্থানের উপর ভিত্তি করে রাষ্ট্র কোন নাগরিকের সাথে বৈষম্য করতে পারবে না। এইজন্য এইধরনের কোন কিছুর ভিত্তিতে দেশে বৈষম্য করা নিষিদ্ধ। একটি রাষ্ট্রে পুরুষদের মতই নারীদেরও রাষ্ট্র এবং সর্বজনীন ক্ষেত্রে সমান অধিকার রয়েছে। কেবল ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ নারীপুরুষ ভেদে বা জন্মস্থানের কারনে জনসাধারণের কোন বিনোদন বা বিশ্রামের স্থানে প্রবেশের কিংবা কোন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তির বিষয়ে কোন নাগরিককে কোনরূপ অক্ষমতা, বাধ্যবাধকতা, বাধা বা শর্তের অধীনে করা যাবে না। প্রজাতন্ত্রে কর্মে নিয়োগ বা পদলাভের ক্ষেত্রে সকল নাগরিকের জন্য সুযোগের সমতা থাকবে। কেবল ধর্ম, গোষ্ঠী, বর্ণ, নারীপুরুষভেদ বা জন্মস্থানের কারনে কোন নাগরিক প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগ বা পদ-লাভের অযোগ্য হবে না অথবা তার প্রতি কোন বৈষম্য প্রদর্শন করা যাবে না।

বাংলাদেশ প্রতিবন্ধী কল্যান আইন ২০০১ অনুযায়ী সরকারি বিভাগে, সংবিধিবদ্ধ সংস্থায় এবং স্থানীয় কর্তৃপক্ষের কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে অক্ষম কিন্তু যোগ্যতাসম্পন্ন উপযুক্ত ব্যক্তির কর্মসংস্থানের সমান সুযোগের কথা বলা হয়েছে।

২০০১ সালের প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কল্যাণ আইন ২০১৩ সালে বাতিল করা হয় এবং ২০১৩ সালে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার ও সুরক্ষা আইন ২০১৩ নামে একটি নতুন আইন প্রণীত হয়। এই আইনটি সরকারি এবং বেসরকারি খাতে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করে। কোনও প্রতিষ্ঠান প্রতিবন্ধী ব্যক্তিকে (PWD) বৈষম্যের ভিত্তিতে কর্মসংস্থান দিতে অস্বীকার করতে পারবে না, যতদিন না সেই ব্যক্তি সেই পদে কাজ করার জন্য সক্ষম। আইনটি সরকারি এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে তাদের প্রতিষ্ঠানে এমন পদ চিহ্নিত করার নির্দেশ দেয় যা প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য উপযুক্ত। এই আইনে একটি জাতীয় প্রতিবন্ধী কল্যাণ সমন্বয় কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং এটি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং সরকারি খাতে কোটা বজায় রাখার ক্ষমতা প্রদান করে, বিশেষত কিছু নির্দিষ্ট সরকারি চাকরির গ্রেডে অদম্য প্রতিবন্ধী ও এতিমদের জন্য। আইনটি প্রতিবন্ধীতার কারণে বৈষম্য নিষিদ্ধ করে।উপরন্ত, কর্মসংস্থানে কোন শ্রমিকের সাথে ট্রেড ইউনিয়নের সদস্যপদ অথবা সদস্যপদ না থাকার ভিত্তিতে কোন প্রকার বৈষম্য করার নিষেধাজ্ঞা আছে।

উৎসঃ বাংলাদেশের জনগণের সংবিধানের ধারা ১৯ এবং ২৭-২৯; ২০০৬ সালের শ্রম আইন ধারা ১৯৫; ২০১৩ সালের প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার ও সুরক্ষা আইন ধারা ১৬ এবং ৩৫।

কাজনির্বাচনকরারক্ষেত্রেস্বাধীনতা

বাংলাদেশের সংবিধান জাতীয় জীবনের সব ক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করে থাকে। আইন প্রদত্ত কিছু ক্ষেত্রে বাধা ছাড়া, সকল নাগরিকের যেকোনো আইনি পেশায় বা কাজে প্রবেশ এবং যেকোনো বৈধ ব্যবসা বা বানিজ্য পরিচালনা করার অধিকার আছে।

কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া নারীদের একই প্রতিষ্ঠানে পুরুষদের সাথে কাজ করার অধিকার আছে। শ্রম আইনের ধারা ৬৪ অনুসারে, চলমান যন্ত্রপাতি বা তার কোন অংশ পরীক্ষা-নিরীক্ষা, সমন্বয় এবং তৈলাক্তকরন কাজে সঠিকভাবে প্রশিক্ষন প্রাপ্ত পুরুষ শ্রমিকের নিয়োগ প্রয়োজন। কোন নারী বা কিশোর শ্রমিককে এই ধরনের কাজ করতে এবং স্থির বা চলমান যন্ত্র বা যন্ত্রের কোন অংশে কাজ করার অনুমতি দেওয়া হয় না। নিযুক্ত ব্যক্তির শারীরিক আঘাত, বিষক্রিয়া বা কোন গুরুত্বর রোগের ঝুঁকি থাকে এইরকম কোন কাজে নারী, কিশোর এবং শিশু শ্রমিকের কাজ করার ক্ষেত্রে সরকার নিষেধাজ্ঞা জারি করতে পারে। নারী শ্রমিকদের পানির নিচে বা কোন বিপজ্জনক কাজেও নিয়োগ করা যাবে না। এ ধরনের সীমাবদ্ধ বিধান ২০১৫ সালের শ্রম বিধিমালায়ও রয়েছে।ইপিজেড শ্রম আইনের অধীনে, একজন মহিলা শ্রমিক তার সম্মতি এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ছাড়া রাত ৮ টা থেকে সকাল ৬ টা পর্যন্ত কোন প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে পারবেন না।

উৎসঃ বাংলাদেশের সংবিধানের ধারা ১৯ ও ৪০; ২০০৬ সালের শ্রম আইন-এর ধারা ৬৪, ৭৯, ৮৭; ২০১৫ সালের শ্রম বিধিমালার ধারা ৬৮; এবং ২০১৯ সালের বাংলাদেশ ইপিজেড শ্রম আইন-এর ধারা ৪৬।

কর্মক্ষেত্রেন্যায্যব্যবস্থারনিয়মাবলিঃ

  • বাংলাদেশের গণপ্রজাতন্ত্রী সংবিধান, ৪ নভেম্বর ১৯৭২, সর্বশেষ ২০১৮ সালে সংশোধিত / Constitution of the People's Republic of Bangladesh 4th November 1972, last amended in 2018
  • বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬ / Bangladesh Labour Act 2006
  • বাংলাদেশ শ্রম বিধিমালা, ২০১৫ / Bangladesh Labour Rules, 2015
  • প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন, ২০১৩ / Persons with Disabilities Rights and Protection Act 2013
  • বাংলাদেশ ইপিজেড শ্রম আইন, ২০১৯ / Bangladesh EPZ Labour Act 2019
Loading...