ক্ষতিপূরণ এবং কাজের সময়

This page was last updated on: 2025-02-04

ওভারটাইমেরপ্রতিদান/অধিকসময়কাজেরপ্রতিদান

সাধারনত দৈনিক ৮ ঘণ্টা করে এবং সাপ্তাহিক ৪৮ ঘণ্টা কররম সময় হিসেবে ধরা হয়। বিশ্রাম এবং খাবার সময় ব্যতীত যে পরিমাণ সময় শ্রমিকরা তাদের নিয়োগকর্তার অধীনে কাজের জন্য দিয়ে থাকে সেই সময় কে “কর্মঘণ্টা” হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। শ্রম আইন ২০০৬ অনুসারে, যদি কোন শ্রমিক দৈনিক ৮ ঘণ্টা এবং সাপ্তাহিক ৪৮ ঘণ্টার অধিক কোনো দিন বা সপ্তাহ কাজ করে তাহলে তাকে ওভারটাইম হিসেবে ধরা হয়। ওভারটাইমসহ সর্বোচ্চ কর্ম সময় সাপ্তাহিক ৬০ ঘণ্টার অধিক হবেনা এবং গড়ে বাৎসরিকভাবে ছাপান্ন ঘণ্টার অধিক হতে পারবে না। এই শর্ত অনুযায়ী সর্বোচ্চ ওভারটাইম দৈনিক ২ ঘণ্টা এবং সাপ্তাহিক ১২ ঘণ্টা হয়ে থাকে। তবে এক বছরে ওভারটাইমের পরিমাণ গড়ে সপ্তাহ প্রতি ৮ ঘণ্টা অতিক্রম করতে পারবে না। কাজের সময় ও অধিকাল(overtime) বিষয়ক অনুরূপ বিধানবলী EPZ শ্রম আইন ২০১৯ এ পাওয়া যায়।

কারখানা এবং খনির ক্ষেত্রে কাজ করে এমন ১৬-১৮ বছর বয়সী তরুণদের দৈনিক ৫ ঘণ্টা এবং সাপ্তাহিক ৩০ ঘণ্টা কর্ম সময়, অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের জন্য সর্বোচ্চ কাজের সময় দৈনিক ৭ ঘণ্টা, সাপ্তাহিক ৪২ ঘণ্টা এবং সর্বোচ্চ ওভারটাইম ৬ ঘণ্টা প্রতি সপ্তাহ(কারখানা এবং খনি ক্ষেত্রে জন্য ৩৬ ঘণ্টা এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকদের জন্য ৪৮ ঘণ্টা)। সড়ক পরিবহনের শ্রমিকদের ক্ষেত্রে, মোট ওভারটাইম প্রতি বছর ১৫০ ঘণ্টার অধিক হবে না।

জনস্বার্থ এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের ঝুঁকি বিবেচনা করে সরকার যদি চায় তবে যেকোন বিভাগকে এসকল নিয়ম থেকে ৬ মাসের জন্য অব্যাহতি দিতে পারে। যদি প্রয়োজনে কোনো শ্রমিক ওভারটাইম বা অধিকাল কর্ম করে থাকে তবে তাকে মূল মজুরী, মহার্ঘ্য ভাতা এবং অন্তর্বর্তীকালীন ভাতার সাধারণ হারের দ্বিগুণ হারে অধিকাল ভাতা পরিশোধ করে থাকে।

যে সকল শ্রমিক খণ্ডকালীন কাজের ভিত্তিতে মজুরীভুক্ত , তাদের জন্য ওভারটাইম বা অধিকাল ভাতার কোনো বিধান শ্রম আইনে নেই।

(ধারা ১০০, ১০২, ১০৫, ১০৮, ১১১ এবং ১১৩, শ্রম আইন ২০০৬; ২০১৫ ৯৯ তম; বাংলাদেশের EPZ শ্রম আইন, ২০১৯এর ৩৮, ৪০ ও ৪৫)।

রাত্রিকালীনশ্রমিকদেরকাজেরপ্রতিদান/ক্ষতিপূরণ

শ্রম আইন ২০০৬ কিশোর/কিশোরী এবং নারী শ্রমিকের কাজের সীমাবদ্ধতার সাথে রাত্রিকালীন কাজের সম্পর্ক আলোচনা করে এবং কিভাবে রাত্রিকালীন শ্রমিকদের বিশ্রামের সময়সীমা গণনা করা হবে তার উপায় বর্ণনা করে। একটি প্রতিষ্ঠানের শ্রমিকের কাজের সময়সীমা যদি মধ্যরাত অতিক্রম করে যায় তবে সেক্ষেত্রে তার কাজ শেষ হওয়ার পর থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টা হবে তার বিশ্রামকালীন সময়। কোন নারী শ্রমিককে তার সম্মতি ছাড়া রাতে (কোন প্রতিষ্ঠানের রাত ১০টা থেকে সকাল ৬টার মধ্যে) কাজ করার জন্য বাধ্য করা যাবে না। কিশোর শ্রমিকরা সন্ধ্যা ৭টা থেকে সকাল ৭টার মধ্যবর্তী সময়ে কাজ করতে পারবে না। শ্রম আইনের অধীনে কোন রাত্রিকালীন শ্রমিককে অধিক হারে মজুরী পরিশোধ এবং রাত্রিকালীন শ্রমিকদের কাজের সময় কমানোর জন্য কোন বিধান নেই।

(শ্রম আইনে ধারা ৪১(৩), ১০৬ ও ১০৯)

ছুটিরদিন/বিশ্রামদিবসেরক্ষতিপূরক

কোনো শ্রমিককে প্রয়োজনে যদি সাপ্তাহিক ছুটির দিনে কাজ করতে হয়, তাহলে কাজ শেষ হওয়ার পর থেকেই সে মজুরীসহ সমসংখ্যক উক্ত ছুটির পাওয়ার অধিকার রাখে। একইভাবে যদি প্রয়োজনে কোন শ্রমিক উৎসব/ সরকারি ছুটির দিনে কাজ করে থাকে, তাহলে সে মজুরীসহ ১ দিন বিকল্প ছুটি এবং ২ দিনের ক্ষতিপূরণমূলক ছুটি পাওয়ার অধিকার রাখে। যদি শ্রমিক ইচ্ছা প্রকাশ করে, তাহলে যৌথ দরকষাকষি কমিটির সাথে আলোচনা সাপেক্ষে সাপ্তাহিক ছুটির দিনে কাজ করার পর ওই ছুটি উৎসব-ছুটির সঙ্গে যোগ করে ভোগ করতে পারবে। এই ক্ষেত্রে অতিরিক্ত কাজের জন্য কোনো অতিরিক্ত ভাতা প্রদান করা প্রযোজ্য নয়।

(শ্রম আইন ২০০৬ এর ধারা ১০৩, ১০৪ ও ১১৮(৩))

সাপ্তাহিকছুটি/সরকারীছুটিরদিনেকাজেরপ্রতিদান/ক্ষতিপূরক

সাপ্তাহিক ছুটি বা সরকারি ছুটির দিনে কাজ করার জন্য কোন অধিক হারে মজুরী পরিশোধের বিধান নেই। বরং যদি কোন শ্রমিক সাপ্তাহিক ছুটির / উৎসবের দিনে কাজ করে থাকে তবে সে কাজ শেষ হওয়ার পর পর যত শীঘ্রই সম্ভব পরবর্তী ২৪ ঘণ্টা তাকে ছুটি দিতে হবে।

শ্রম আইনের ২০১৮ সংশধোনী ও ২০১৫ -র আইনের ২০২২ সংশোধনীর অধীনে, সরকারি ছুটির দিনে কাজ করেছেন এমন শ্রমিক তার কাজের জন্য মজুরীসহ ১টি ছুটি এবং দুই দিনের ক্ষতিপূরণমূলক ছুটি পাবেন, যার প্রকৃত অর্থ হল সরকারি ছুটির দিনে কাজ করার জন্য ৩০০% মজুরী ও একটি বিকল্প ছুটির দিন তিনি পাবেন।

উৎস: শ্রম আইন ২০০৬ এর ধারা ১০৪ ও ১১৮(৩)

ঘণ্টাপ্রতিকাজ,সাপ্তাহিকছুটিএবংসরকারীছুটিরদিনেকাজেরনিয়মাবলিঃ

  • বাংলাদেশ ইপিজেড শ্রম আইন, ২০১৯ / Bangladesh EPZ Labour Act 2019
Loading...