কাজেনিয়োগেরজন্যসর্বনিম্নবয়স
শ্রম আইন ২০০৬ অনুযায়ী শিশুদের নিয়োগ নিষিদ্ধ এবং কোন কারখানায় তাদেরকে নিয়োগ করার ক্ষেত্রে সক্ষমতা সার্টিফিকেটের প্রয়োজন হয়। শিশু বলতে তার বয়স চৌদ্দ বছর সম্পন্ন হয়েছে এবং কিশোর বলতে ষোল বছর সম্পন্ন হয়েছে কিন্তু সে ১৮ বছরের নিচে এমন ব্যক্তিকে বোঝায়। ব্যতিক্রম ক্ষেত্রে, কোন শিশু বার বছর সম্পন্ন করেছে এমন শিশুকে হালকা কাজে নিয়োজিত করা যাবে যেখানে শিশুটির শারীরিক স্বাস্থ্য এবং উন্নয়নে বা মানসিক বিকাশে কোন প্রকার ব্যাঘাত ঘটাবে না। এই ধরনের শিশুদের কাজের সময় এমনভাবে নির্ধারণ করতে হবে যাতে করে তাদের স্কুলের উপস্থিতির কোন সমস্যা না হয়। শ্রম আইনের অধীনে শিশুদের শ্রম চুক্তি তাদের পিতামাতা বা অভিভাবক দ্বারা করার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা আছে। কিশোর শ্রমিকদের ক্ষেত্রে তাদের সক্ষমতার সার্টিফিকেট নিবন্ধিত চিকিৎসক দ্বারা প্রদান করা বাধ্যতামূলক। এই ধরনের সক্ষমতা সার্টিফিকেট ইস্যু করার তারিখ হতে বার মাসের একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত কার্যকর থাকে। প্রাথমিক শিক্ষা (বাধ্যতামূলক) আইন, ১৯৯০ এর ধারা ২ অনুযায়ী বাধ্যতামূলক শিক্ষার বয়স ১১ বছর নির্ধারণ করা হয়েছে।
ইপিজেড শ্রম আইনের অধীনে চাকরির জন্য সর্বনিম্ন বয়স ১৮ বছর। আইনটি যার বয়স ১৮ বছর পূর্ণ হয়েছে এমন একজন অপ্রাপ্ত বয়স্ক শ্রমিককে একজন ব্যক্তি হিসাবে সংজ্ঞায়িত করে ।
উৎসঃ ২০০৬ সালের শ্রম আইন-এর ধারা ৩৪; ২০১৯ সালের বাংলাদেশ ইপিজেড শ্রম আইন-এর ধারা ১৭৫।
বিপজ্জনককাজেরক্ষেত্রেসর্বনিম্নবয়স
বিপজ্জনক কাজের জন্য নির্ধারিত সর্বনিম্ন বয়স ১৮ বছর। ১৬ বছরের উপরে এবং ১৮ বছরের নিচে শ্রমিকদেরকে কোন প্রতিষ্ঠানে যন্ত্রপাতি চালু অবস্থায় পরিষ্কারের জন্য, তেল প্রদানের জন্য বা তাকে সুবিন্যস্ত করার জন্য বা সেই যন্ত্রের চলমান অংশগুলোর মাঝে বা স্থির এবং চালু অংশের মাঝে কাজ করার অনুমতি দেওয়া যাবে না। কোন কিশোর এমন কোন যন্ত্রের কাজ করবে না যদি না সে উক্ত যন্ত্রপাতি সংক্রান্ত বিপদ সম্পর্কে এবং এই ব্যাপারে সাবধানতা অবলম্বন সম্পর্কে সম্পূর্ণ ভাবে অবগত থাকে অথবা সেই যন্ত্রতে কাজ করার ব্যাপারে সে যথেষ্ট প্রশিক্ষণ গ্রহন করেছে বা সেই যন্ত্র সংক্রান্ত অভিজ্ঞ এবং পুরোপুরি জ্ঞানসম্পন্ন ব্যক্তির তত্ত্বাবধানে কাজ করে। একজন কিশোর শ্রমিক কোন কারখানা বা খনিতে দিনে ৫ ঘণ্টা এবং সপ্তাহে ৩৩ ঘণ্টার অধিক কাজ করতে পারবে না এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে দিনে ৭ ঘণ্টা এবং সপ্তাহে ৪৫ ঘণ্টার অধিক কাজ করতে পারবে না। কোন কিশোর শ্রমিককে কোন প্রতিষ্ঠানে সন্ধ্যা ৭টা হতে সকাল ৭টার মধ্যে কাজ করতে দেওয়া যাবে না। কোন কিশোর শ্রমিককে ভূগর্ভে বা পানির নিচে বা অন্য বিপজ্জনক কাজে নিয়োগ দেওয়া যাবে না।
বাংলাদেশ সরকার শিশুদের জন্য নিষিদ্ধ বিপজ্জনক কাজের একটি তালিকা প্রকাশ করেছে। ২০১৫ সালের শ্রম বিধি সংশোধনী (২০২২) এ ৪৩টি বিপজ্জনক কাজের একটি তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে যেখানে শিশু এবং কিশোর শ্রমিকদের নিয়োগ নিষিদ্ধ। তালিকাটি শ্রম আইনের ৭৯ ধারার অধীনে জারি করা হয়েছে। এতে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে ইটভাটায় কাজ, খনিতে কাজ, বিভিন্ন প্রকারের যন্ত্রপাতি নিয়ে কাজ, গভীর সমুদ্রে মাছ ধরা ইত্যাদি।
এদিকে একটি নতুন আইন (শিশু আইন ২০১৩) অনুমোদিত হয়েছে, যা শিশুদের আইনগত বয়স ১৪ থেকে বৃদ্ধি করে ১৮ বছর করেছে এবং শিশুদের শোষণ করার জন্য কঠোর শাস্তির বিধান রেখেছে। এই শাস্তি অন্তর্ভুক্ত করে দুই বছরের জন্য কারাদণ্ড অথবা ৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত জরিমানা অথবা উভয়ই। যে ব্যক্তি শিশুদের শোষণ বা তাদের কর্মসংস্থানের মাধ্যমে উপার্জন লাভ করে অথবা শিশুকে অবৈধ বিনোদনের জন্য ব্যবহার করে, তাকে এই অপরাধে সহায়ক হিসেবে দায়ী করা হবে।
উৎস: শিশু আইন ২০১৩ এর ধারা ৮০; শ্রম আইন ২০০৬ এর ধারা ৩৯-৪২; শ্রম বিধিমালা ২০১৫ এর বিধি ৬৮, SRO নং ৯১-আইন/২০২২; শ্রম বিধি ২০১৫ সংশোধনী (২০২২)