পারিশ্রমিকসহছুটি/বার্ষিকছুটি
শ্রমিকের বয়স এবং শিল্পকারখানা এবং একই ধরণের অন্যান্য সীমাবদ্ধতার উপর ভিত্তিতে বার্ষিক ছুটির অনুমোদন পরিবর্তন নির্ভর করে।
একটি প্রতিষ্ঠানে সব শ্রমিকদের বার্ষিক ছুটি পাওয়ার যোগ্য হওয়ার জন্য শেষ ১২ মাসের মধ্যে কমপক্ষ্যে ২৪০ দিন সেবা প্রদান করে একটানা ১ বছর কাজ করতে হবে। এই ১ বছরের সেবাকে যেকোনো ধরণের কর্মবিরতি, পারিশ্রমিক সহ ছুটি, দুর্ঘটনা বা অসুস্থতার কারনে পারিশ্রমিক সহ/ ছাড়া ছুটি, ১৬ সপ্তাহ পর্যন্ত মাতৃত্বকালীন ছুটি, ছাঁটাই বা আইনী ধর্মঘট বা কারবার স্থগিত হওয়া সত্ত্বেও ধারাবাহিক ভাবে নেওয়া হবে। একজন প্রাপ্ত বয়স্ক শ্রমিক পারিশ্রমিকসহ এক দিন বার্ষিক ছুটি পাওয়ার যোগ্যতা রাখেঃ ১৮দিন কাজ করার জন্য (দোকান, বান্যিজ্যিক বা শিল্প প্রতিষ্ঠান, কারখানা বা সড়ক পরিবহন সেবার ক্ষেত্রে), ২২দিন কাজ করার জন্য (চা বাগানের শ্রমিকদের জন্য), এবং ১১দিন কাজ করার জন্য (পত্রিকাতে কাজ করার জন্য)।
একজন কিশোর শ্রমিক (১৬-১৮ বছর বয়সী) ১দিন পারিশ্রমিক সহ ছুটি পাওয়ার অধিকার রাখেঃ প্রতি ১৫দিন কাজের জন্য(কারখানার শ্রমিক), প্রতি ১৮দিন কাজের জন্য (চা বাগানের শ্রমিকদের জন্য), এবং প্রতি ১৪দিন কাজের জন্য (দোকান বা বান্যিজ্যিক বা শিল্প প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক)। রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরন এলাকার শ্রমিকদের পূর্ববর্তি ১২ মাসের প্রতি ২২ দিন কাজ করার জন্য ১দিন মজুরীসহ ছুটি নেয়ার অধিকার আছে।
বার্ষিক ছুটি অন্য যেকোনো সময়ে অন্য ছুটির সাথে নেয়া যেতে পারে।
এক বছরের মধ্যে জমাকৃত ছুটি পরবর্তী ১২ মাসের মধ্যে নেয়া যেতে পারে, শর্তসাপেক্ষে যে যেকোনো ছুটি পরবর্তী বছরের সাথে যোগ হয়ে সর্বোচ্চ ৪০,৬০ বা ৮০ দিনের মত অনুমদিত হবে। জমাকৃত এই অনুমোদিত ছুটি পরবর্তী বছরে যোগ করে প্রাপ্তবয়স্ক শ্রমিকদের ক্ষেত্রে ৪০ দিন পর্যন্ত শিল্প কারখানা বা সড়ক পরিবহন প্রতিষ্ঠানের, এবং ৬০ দিন পর্যন্ত চা বাগান, দোকান, বান্যিজ্যিক বা শিল্প প্রতিষ্ঠানের জন্য নেয়া যাবে।
কিশোর শ্রমিকদের ক্ষেত্রে জমাকৃত এই ছুটি শিল্প কারখানা বা চা এর দোকানের পরবর্তী বছরের ৬০ দিন পর্যন্ত এবং দোকান বা বান্যিজ্যিক বা শিল্প প্রতিষ্ঠানে ৮০ দিন পর্যন্ত নেয়া যাবে। রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চলের শ্রমিকদের বার্ষিক এই ছুটি পরবর্তী ৩০ দিন পর্যন্ত নেয়া যাবে। কোম্পানির স্বার্থে যদি কোন শ্রমিক ছুটি না নেয়, সে ক্ষেত্রে নিয়োগকর্তা আর্থিকভাবে সেই শ্রমিককে ক্ষতিপূরণ দিতে পারে।
বার্ষিক ছুটিকে বিভিন্ন সময়ের মধ্যে বিভক্ত করা যেতে পারে, তবে শ্রম আইন অনুসারে এইটাও উল্ল্যেখ করা যেতে পারে যে একই সময়ে বার্ষিক ছুটি নেয়ার জন্যে প্রাপ্তবয়স্কদের জন্যে ৪ দিনের কম নয় এবং কিশোরদের জন্যে ৫ দিনের কম হতে পারবে না।
বার্ষিক ছুটি নেয়ার এই সময় সীমার মধ্যে, শ্রমিককে তার মহার্ঘ ভাতা, বর্তমান প্রয়োজনমত বা অন্তর্বর্তীকালীন (যদি থাকে) ভাতা সহ পূর্ণ সময়ের দৈনিক মজুরী দিতে হবে, তবে এর মধ্যে থেকে বোনাস এবং ওভারটাইম বাদ হবে।
ছুটি শুরু হওয়ার আগে থেকে শ্রমিকের পারিশ্রমিক প্রদান করতে হবে, যেখানে পারিশ্রমিক প্রদানের সময় হলঃ প্রাপ্ত বয়স্কদের ক্ষেত্রে ৪ বা তার অধিক দিন এবং কিশোরদের ক্ষেত্রে ৫ বা তার অধিক দিন।
বার্ষিক ছুটি ছাড়া সকল শ্রমিকদের ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ১ বছরের মধ্যে ১০দিন নৈমিত্তিক ছুটির অনুমোদন রয়েছে, শুধুমাত্র চা বাগানের শ্রমিক ব্যতীত।
(শ্রম আইন ২০০৬ এর ধারা ১৪,১১৫,১১৭ ও ১১৯, ১৯৮৯ সালের বেপযা নিয়মাবলী নং.১ এর ধারা ১১)
সরকারীছুটিতেপারিশ্রমিকেরহার
প্রত্যেক শ্রমিককে প্রতি পঞ্জিকা বৎসরে ১১ দিনের পারিশ্রমিকসহ ছুটি মঞ্জুর করতে হবে। বাংলাদেশে সাধারণত ধর্মীয় এবং স্মৃতি বার্ষিকী স্বরূপ দুই ধরনের সরকারী ছুটি প্রচলিত আছে। ঈদ-এ-মিলাদুন্নবী (১২ই রবিউল আউয়াল এ হযরত মুহাম্মাদ (সঃ) এর জন্ম বার্ষিকী), আন্তর্জাতিক ভাষা দিবস (২১শে ফেব্রুয়ারি), স্বাধীনতা দিবস (২৬শে মার্চ), বাংলা নববর্ষ (১৪ই এপ্রিল), মে দিবস (১লা মে), বৌদ্ধ পূর্ণিমা (প্রথাগত চন্দ্র পঞ্জিকা দ্বারা নির্ধারিত), শবে-বরাত, লাইলাতুল কদর, ঈদ-উল-ফিতর (ইসলামিক রমজান মাসের শেষে ৩দিন), জাতীয় শোক দিবস (১৫ই আগস্ট), কৃষ্ণ জন্মঅশ্তহমি (১৭ই আগস্ট), বিজয়া দশমী/ দুর্গা পূজা, ঈদ-উল-আযহা (১০ই জিলহজ্জ, ৩দিন), আশুরা(১০ই মহররম), বিজয় দিবস (১৬ই ডিসেম্বর) এবং বড়দিন (২৫ই ডিসেম্বর)।
সরকারী ছুটির দিনগুলোতে, শ্রমিকদেরকে তাদের মহার্ঘ ভাতা এবং এড-হক অন্তর্বর্তীকালীন পারিশ্রমিক সহ (যদি থেকে থাকে) সম্পূর্ণ দৈনিক মজুরী প্রদান করা হবে, তবে এর থেকে ওভারটাইম ভাতা এবং বোনাস বাদ থাকবে।
(শ্রম আইন ২০০৬, ধারা ১১৮, ১১৯)